মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন: সময়সূচী, টিকিট মূল্য ও ভ্রমণ গাইড

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নতুন সংযোগ তৈরি করা মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন এখন দুই দেশের যাত্রীদের জন্য অন্যতম আরামদায়ক ও নির্ভরযোগ্য ভ্রমণের মাধ্যম। এই ট্রেনটি ঢাকা থেকে ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত যাতায়াত করে।
📌 ট্রেনের পরিচিতি
বিষয় | তথ্য |
---|---|
ট্রেনের নাম | মিতালী এক্সপ্রেস |
ট্রেন নম্বর | ১৩১৩১/১৩১৩২ |
রুট | ঢাকা → নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি), ভারত |
সেবা দিন | প্রতি সপ্তাহে দুই দিন |
ট্রেন টাইপ | আন্তর্জাতিক (International Express) |
ট্রিপ সময় | প্রায় ৯ ঘণ্টা |
পরিচালনা | বাংলাদেশ রেলওয়ে ও ভারতীয় রেলওয়ে |
🕒 মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন সময়সূচী
ঢাকা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি
স্টেশন | ছাড়ার সময় (বাংলাদেশ সময়) |
---|---|
ঢাকা (কমলাপুর) | রাত ৯:৫০ |
নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) | সকাল ৭:১৫ (ভারতীয় সময়) |
নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকা
স্টেশন | ছাড়ার সময় (ভারতীয় সময়) |
---|---|
নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) | রাত ১১:৪৫ |
ঢাকা (কমলাপুর) | সকাল ৮:১০ (বাংলাদেশ সময়) |
🎫 মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন টিকিট মূল্য
শ্রেণি | ভাড়া (BDT) | ভাড়া (INR, আনুমানিক) |
---|---|---|
এসি চেয়ার | ২,৯৫৫ টাকা | ₹২,৫০০ |
এসি বার্থ | ৪,৯৩৫ টাকা | ₹৪,২০০ |
টিপ: ভাড়ায় ট্যাক্স ও সার্ভিস চার্জ অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। ভাড়া পরিবর্তনশীল, তাই যাত্রার আগে বাংলাদেশ রেলওয়ে অফিসিয়াল সাইট বা টিকিট বুকিং পোর্টাল দেখে নিন।
🛂 পাসপোর্ট ও ভিসা সংক্রান্ত তথ্য
- আন্তর্জাতিক ট্রেন হওয়ায় যাত্রীদের বৈধ পাসপোর্ট ও ভারতের ভিসা থাকতে হবে।
- ভিসায় স্পষ্টভাবে “Entry via Rail” বা “Land Border” উল্লেখ থাকলে ট্রেন যাত্রায় সমস্যা হবে না।
🛏️ কোচ ও সুবিধা
মিতালী এক্সপ্রেসে মোট ১০টি বগি রয়েছে:
- ৪টি এসি চেয়ার কোচ
- ৪টি এসি বার্থ কোচ
- ১টি পাওয়ার কার
- ১টি গার্ড কাম লাগেজ ভ্যান
উপকারিতা:
- উন্নত মানের এসি কোচ
- পরিষ্কার ও আরামদায়ক সিট
- রেল পুলিশ ও কাস্টমস সুবিধা
- চেকিং ও ইমিগ্রেশন একই স্টেশনে
📍 ঢাকা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি ভ্রমণ রুট
ঢাকা → টঙ্গী → জয়দেবপুর → চুয়াডাঙ্গা → দর্শনা → গেদে → নিউ জলপাইগুড়ি
বর্ডার পার হওয়ার স্টেশন:
- দর্শনা (বাংলাদেশ)
- গেদে (ভারত)
✅ টিকিট বুকিং পদ্ধতি
বর্তমানে শুধুমাত্র কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, ঢাকা থেকে টিকিট সংগ্রহ করা যায়।
যা লাগবে:
- পাসপোর্ট (মেশিন রিডেবল)
- ভিসা কপি
- ছবিসহ আবেদন ফর্ম
ভবিষ্যতে: অনলাইনে টিকিট বুকিং চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
🌍 মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হওয়ার পেছনের প্রেক্ষাপট
- মিতালী এক্সপ্রেস চালু হয় ১ জুন ২০২২ সালে।
- এটি মৈত্রী এক্সপ্রেস ও বন্ধন এক্সপ্রেস–এর পর তৃতীয় আন্তঃদেশীয় ট্রেন সার্ভিস।
- দুই দেশের বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে “মিতালী” নামকরণ করা হয়।
ℹ️ যাত্রীদের জন্য কিছু জরুরি পরামর্শ
- যাত্রার অন্তত ৩ ঘণ্টা আগে স্টেশনে পৌঁছান।
- প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (পাসপোর্ট, ভিসা, টিকিট) সঙ্গে রাখুন।
- কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন চেকিংয়ে সহযোগিতা করুন।
- খাবার ও পানির ব্যবস্থা নিজে করে নিন, ট্রেনে সার্ভিস সীমিত।
- মোবাইল রোমিং ও Roaming Data Plan আগেই সক্রিয় করুন।
❓ FAQ – আপনার প্রশ্ন, আমাদের উত্তর
মিতালী এক্সপ্রেসে অনলাইন টিকিট কাটা যায় কি?
না, এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র কমলাপুর স্টেশন থেকেই টিকিট সংগ্রহ করা যায়।
ট্রেনে Wi-Fi বা খাবার সার্ভিস আছে কি?
না, Wi-Fi নেই এবং খাবার সীমিতভাবে পাওয়া যায়। নিজের ব্যবস্থা করে নেওয়া ভালো।
ভিসায় “Land Port” লেখা থাকলে ট্রেনে যাওয়া যাবে?
হ্যাঁ, কিন্তু “Entry via Rail” বা স্পষ্ট নির্দেশনা থাকলে আরও ভালো হয়। ভিসার টাইপ ও শর্ত দেখে নিশ্চিত হতে হবে।
টিকিট ফেরা যায় কি?
হ্যাঁ, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফেরত দেওয়া গেলে কিছু কাটাকাটি (cancellation fee) দিয়ে রিফান্ড পাওয়া যায়।
🔗 আরও জানতে:
✍️ উপসংহার
মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন শুধু একটি যাত্রার মাধ্যম নয়, বরং বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতীক। এটি ব্যবসায়ী, পর্যটক ও ছাত্রছাত্রীদের জন্য নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও সময়োপযোগী একটি ট্রেন সার্ভিস। আপনার পরবর্তী ভারতের ট্রিপে মিতালী এক্সপ্রেস হতে পারে এক চমৎকার অভিজ্ঞতা।